Share This Story !

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ আজ বুধবার (২ সেপ্টেম্বর,২০২৮) ‘ কক্ষচ্যুত শোভন এখন এলাকামুখী; ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ পদে উঠে এসেছিলেন” শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয় কালেরকন্ঠ পত্রিকায়।
সেখানে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখার কর্মী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য থেকে ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ সভাপতি পদে উঠে এসেছিলেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর এই উঠে আসা ছাত্রলীগের সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়।
ছাত্ররাজনীতিতে উত্তরবঙ্গের মানুষের মনে ব্যাপক আশার সঞ্চার করে। ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই দুই বছর মেয়াদি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু এক বছর গড়াতেই অভিযোগ ও অনিয়মের কারণে তাঁকে সরে যেতে হয়।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, শোভন ছাত্রলীগে সক্রিয় থাকলেও ছাত্ররাজনীতিতে সেভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি। দাদা শামসুল হক চৌধুরীর সুনামের কারণে তাঁকে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে নির্বাচিত করা হয়।
ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকাকালে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ গঠন নিয়ে বিতর্ক; শোভন নিজে বিবাহিত হয়ে নিজের স্ত্রীর কথা গোপন করা , অছাত্র ও হত্যা মামলার আসামিকে সংগঠনে পদ দেওয়াসহ অনিয়ম, মাদক সেবন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এবং সর্বশেষ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু কোটির উন্নয়নকাজের ক্ষেত্রে ঠিকাদারসহ উপাচার্যের কাছে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহল। এর জেরে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর শোভনকে সরিয়ে দেয়া হয় এমনকি ছাত্রলীগের সম্মেলনে ছাত্রলীগের সাবেক সকল সভাপতি সেক্রেটারিকে ডাকা হলে ও তাদেরকে ডাকা হয় নি।
এদিকে চমৎকার ব্যাপার হচ্ছে, একই আসনের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি, বিন ইয়ামীন মোল্লা এর বাড়ি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতারা যখন জেলে আর হাসপাতালে তখন তিনি সফল নেতৃত্ব দিয়ে সংকট থেকে উত্তরণ ও দাবি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
আর এদিকে ডাকসু নির্বাচনে শোভনকে হাড়িয়ে ভিপি হওয়া নুরুল হক নুর নতুন দল গঠন করতে যাচ্ছে এবং কোটা আন্দোলনের অন্যতম ত্যাগী ও গুরুত্বপূর্ণ এই নেতাকে তাই ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়। এবং করোনা কালে ও বন্যার মাঝে শোভন চৌধুরী ও ইয়ামিন মোল্লা দুজনকেই এলাকায় কাজ করতে দেখা যায়।এ বিষয়ে বিন ইয়ামীন মোল্লাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, কোন অঞ্চল থেকে কেউ শীর্ষ নেতৃত্বে গেলে এটা সবার জন্যই একটা পজিটিভ বিষয়। হোক সে অন্য সংগঠনের এতে এলাকারই উপকার হয়। আমিও পজিটিভ ছিলাম। কিন্তু তিনি (শোভন) যেভাবে মাদকাসক্তি ও দূর্নীতির দায়ে বহিষ্কার হয়েছেন এটা আসলে এলাকার মানুষের মুখে চুনকালি মেখে দিয়েছেন। এলাকার মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন। এলাকার মানুষ তাকে নিয়ে হতাশ। তার পরে ও রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। তার ঘুরে দাড়াবার চেষ্টাকে স্বাগত জানাই।তিন যদি আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হোন, ছাত্র অধিকার পরিষদের কাছে আবারো হারতে হবে।
উল্লেখ্য, শোভন চৌধুরীর বাবা বর্তমানে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা চেয়ারম্যান এবং আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান সেক্ষেত্রে বিন ইয়ামীন মোল্লাকে নতুন দল গঠন করে তার সাথে লড়তে হবে। সেটি অনেকটা কঠিন হলেও ছাত্র অধিকার পরিষদের বর্তমান তুঙ্গে উঠা জনপ্রিয়তা তার সহায়ক হবে এবং ইতিমধ্যে এলাকায় তিনি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে অনেকদূর কাজ এগিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।